মানবদেহে অনেক রোগ আছে যেগুলোর চিকিৎসা নিলেও স্থায়ী কোন সমাধান পাওয়া যায়না। তবে দমিয়ে রাখা যায়। এই দমিয়ে রাখার বিষয়ে যথেষ্ট কার্যকরী ভুমিকা পালন করে রসুন।
অনেকের কাছেই সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়াটা ভীষণ অস্বাস্থ্যকর মনে হতে পারে। কিন্তু খালি পেটে রসুন খাওয়া দেহের জন্য ভীষণ স্বাস্থ্যকর একটি ব্যাপার।
আসুন তাহলে জেনে নিই সকালে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে সারবে যেসব রোগ :





১. অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ রসুন র’ক্তকে পরিশুদ্ধ রাখে। রক্তে উপস্থিত শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণেও করে রসুন এবং লোহার মত শক্ত করে আপনার গোপনা…।
২. সকালে খালি পেটে রসুনের কোয়া খেলে সারা রাত ধরে চলা বিপাকক্রিয়ার কাজ উন্নত হয়। এ ছাড়া শরীরের দূষিত টক্সিনও মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যেতে পারে।
৩. শীতে ঠাণ্ডা লাগলে খালি পেটে এক কোয়া রসুন খেলে উপকার পাওয়া যাবে। দুই সপ্তাহ সকালে রসুন খেলে ঠাণ্ডা লাগার প্রবণতা অনেকটা কমে।
ডিভোর্স দিও না, প্রয়োজনে পরকীয়া করো





আধুনিক ভারতীয় নারীদের চিন্তাভাবনা-বিবেচনা নিয়ে শুরু হয়েছে বিবিসি হিন্দির বিশেষ ধারাবাহিক প্রতিবেদন ‘হার চয়েস’।
১২ জন ভারতীয় নারীর বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা, তাদের আ’কাঙ্ক্ষা, বিক’ল্পের সন্ধান- এ সবই উঠে এসেছে তাদের মুখ থেকে। তারই ধারাবাহিকতায় শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দক্ষিণ ভারতের এক নারীর জী’বনকথা নিয়ে একটি প্রতিবেদন। তবে মেয়ে’টির অনুরোধে প্রতিবেদনটিতে তার নাম পরিচয় গো’পন রাখা হয়েছে।





‘সেটা ছিল আমার বিয়ের প্র’থম রা’ত। প্রথমবার কোনো পুরুষের সঙ্গে অন্ত’র’ঙ্গ হতে চলেছিলাম আমি। প্রাণের বান্ধবীদের কাছ থেকে শোনা কিছু কথা আর কয়েকটা প’র্নো ভিডিও দেখে আমার মনের মধ্যে প্রথম রা’তের যে ছবিটা বারে বারে মনে পড়ছিল, ইচ্ছাগুলোও জেগে উঠছিল সেরকমভাবেই।
মাথা ঝুঁকিয়ে, হাতে দুধের গ্লাস নিয়ে আমি যখন শোবার ঘরে প্রবেশ করলাম, ততক্ষণ পর্যন্ত সেই ছবির মতোই সব কিছু চলছিল। আমি তখনও জানতাম না যে তার কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার সেই স্বপ্নগুলো ভেঙে যাবে।





প্রথম রাতের স্বপ্নে এরকমটা হওয়ার ছিল-আমি ঘরে আসার পরে স্বামী আমাকে জড়িয়ে ধরবে, চু’ম্ব’নের স্রোতে ভাসিয়ে দেবে, আর সারা রাত ধরে আমাকে ভালবাসবে।
কিন্তু বাস্তব যে ছবিটা দেখলাম তা হলো, আমি ঘরে ঢোকার আগেই আমার স্বা’মী ঘুমিয়ে পড়েছেন। ওই মুহূর্তে মনে হলো আমার অস্তিত্বটাই যেন আমার স্বামী সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করলেন। আমার বয়স সেই সময়ে ছিল ৩৫। আমি কৌ’মার্য হারাইনি তখনও।’





স্বপ্নভ’ঙ্গ
কলেজে পড়ার সময়ে, বা তার পরে যখন চাকরি করি, তখনও দেখতাম আমারই কাছের কোনো ছেলে আর মেয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠছে। তারা একে অন্যের হাত ধরে, বা কাঁধে মাথা রেখে ঘুরে বেড়াতো।
আমি মনে মনে ভাবতাম, আহা, যদি আমারও এরকম কোনও সুযোগ আসতো। আমারও তো ইচ্ছা হতো ওইভাবে কারও ঘনিষ্ঠ হতে!
আমাদের পরিবারটা বেশ বড় ছিল- চার ভাই, এক বোন, বয়স্ক বাবা-মা। তবুও আমার সবসময়েই একা লাগতো।
আমার ভাই-বোনদের সবারই বিয়ে হয়ে গিয়েছিল। তাদের সকলের পরিবার ছিল। কোনো সময়ে এটাও মনে হতো যে ভাই-বোনরা কি আমার জন্য একটুও চিন্তা করে? তাদের কি মনে হয় না যে আমারও বয়স হচ্ছে, তবুও আমি ততোদিনও একা?





আমারও তো প্রেম করতে ইচ্ছা করতো। একা’কীত্ব গ্রাস করছিল আমাকে। কখনো কখনো মনে হতো যে আমি খুব মোটা- সেজন্যই আমার ইচ্ছাগুলো পূরণ হয় না।
কিন্তু পুরুষ মানুষ কি মোটা মেয়ে পছন্দ করে না? শুধু কি আমার ওজনের জন্য আমার পরিবার জীবনসঙ্গী খুঁজে পাচ্ছে না? তাহলে কি চিরজীবন আমাকে একাই কাটাতে হবে? এই সব প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে সব সময়ে ঘুরপাক খেতো।





অতঃপর বিয়ে
শেষমেশ, আমার যখন ৩৫ বছর বয়স, তখন বছর চল্লিশেকের একজন আমাকে বিয়ে করতে এগিয়ে এলো। যখন প্রথম দেখা করি তার সঙ্গে, তখনই আমার মনের মধ্যে থাকা চিন্তাগুলো তাকে জানিয়েছিলাম।
সে কোনো কথারই জবাব দেয়নি। আমার মনে হতো আমার কথাগুলো যেন মন দিয়ে শুনছেই না। সব সময়ে নিচের দিকে তাকিয়ে থাকতো সে। কোনো কথারই জবাব দিতো না, শুধু মাথা নাড়িয়ে উত্তর দিতো।





আমি ভাবতাম আজকাল মেয়েদের থেকেও অনেক বেশি ল’জ্জা পায় পুরুষ। আমার হবু স্বামীও বোধহয় সেরকম। তাই আমার কোনো কথারই জবাব দিচ্ছে না।
কিন্তু বিয়ের পরে প্রথম রাতের ঘটনায় আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। আমি শুধু ভাবছিলাম সে কেন ওরকম আচ’রণ করল।
পরের দিন সকালে আমি যখন জিজ্ঞাসা করলাম, সে জবাব দিল যে তার শ’রীর ভাল ছিল না। কিন্তু তার থেকে আর একটা শব্দও বার করতে পারিনি। প্রথম রাতের পরে দ্বিতীয়, তৃতীয় রাতও কেটে গেল একইভাবে।
সব গোপন করা হয়
আমি শাশুড়ির কাছে বিষয়টা জানালাম। কিন্তু তিনিও ছেলের পক্ষ নিয়ে বলতে লাগলেন। ‘ও ল’জ্জা পাচ্ছে। ছোট থেকেই মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতে অস্ব’স্তি বোধ করে ও। ছেলেদের স্কুলে পড়াশোনা করেছে তো, সেই জন্য। ওর কোনো দিদি বা বোন নেই, কোনো মেয়ে বন্ধুও নেই। সেজন্যই এরকম আ’চরণ।’





সাময়িক স্ব’স্তি পেয়েছিলাম কথাটা শুনে। কিন্তু ব্যাপারটা আমার মাথা থেকে কিছুতেই গেল না। ওদিকে আমার সব ইচ্ছা-আকা’ঙ্ক্ষা, স্বপ্ন এক এক করে ভেঙে যাচ্ছিল।
শুধু যে শা’রী’রিক চাহি’দাই আমাকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছিল তা নয়। আমার স্বামী কোনো কথাই বলতো না। আমার মনে হতে লাগলো যে সব সময়েই যেন আমাকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। আমার থেকে সে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।





যখন কোনো নারী পো’শাক ঠিক করে, তখনো পুরুষ মানুষ আড়চোখে সেই দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু আমি যদি রাতে সব পোশাক খুলেও ফেলি, তাহলেও আমার স্বামী সম্পূর্ণ উদাসীন থাকতেন।
তাহলে কি আমার ওজন তার এই ব্যবহারের কারণ? কোনো চাপে পড়ে আমাকে বিয়ে করেছে সে? এইসব প্রশ্ন আমার মনের মধ্যে আসতে শুরু করেছিল তখন। কিন্তু এসব কথা কানো সঙ্গে যে শেয়ার করব, সেই উপায় নেই।





আর কতো অপেক্ষা
আমার পরিবারের কারো সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলার উপায় ছিল না, কারণ সেখানে সবাই মনে করতে শুরু করেছিল যে আমি খুব ভাল আছি। এদিকে আমার অপেক্ষার সীমারেখা ভাঙার দিকে চলেছে। আমাকে এ সম’স্যা’র সমাধান নিজেকেই বের করতে হবে।
বেশিরভাগ ছুটির দিনেও আমার স্বামী বাড়িতে থাকতো না। হয় কোনো বন্ধুর বাড়িতে চলে যেতো, বা বয়স্ক বাবা-মাকে নিয়ে কোথাও যেতো।





ঘটনাচক্রে সেদিন বাড়িতেই ছিল আমার স্বামী। আমি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে সরাসরি জানতে চাইলাম, ‘আমাকে কি পছন্দ নয় তোমার? আমরা দুজনে একবারের জন্যও অ’ন্তর’ঙ্গ হইনি এতদিনে। তোমার সম’স্যাটা কি?’ জলদি জবাব দিয়েছিল, ‘আমার তো কোনো সম’স্যা নেই!’
উত্তর পেয়ে আমার মনে হল এটাই সুযোগ তার সঙ্গে অন্ত’র’ঙ্গ হওয়ার। আমি আকর্ষণ করার চেষ্টা করছিলাম তাকে। কিন্তু কোনো ফলই হচ্ছিল না। কোনোভাবেই তাকে উ’ত্তেজিত করতে পারলাম না।





আমি বুঝতে পারছিলাম না যে এটা নিয়ে কার সঙ্গে কথা বলব। একদিন হঠাৎ করেই জানতে পারলাম যে সে ন’পুং’সক (পু’রু’ষত্ত্ব’হীন)। বিয়ের আগেই ডা’ক্তাররা এটা তাকে নিশ্চিত করেছিল। সে নিজে আর তার বাবা-মা সবকিছুই জানতেন। কিন্তু আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমাকে ধোঁ’কা দেয়া হয়েছে।
আমি সত্যিটা জেনে ফেলেছিলাম, কিন্তু তার কোনো ল’জ্জা ছিল না এটা নিয়ে। তারপরেও কখনো সে নিজের ভুলটা স্বীকার করেনি।





কেউ শুনলো না আমার কথা
সমাজ তো নারীদের সামান্য ভুলচু’ককেও বড় করে তুলে ধরে। কিন্তু কোনো পুরুষের যদি কোনো ভুল হয়, সেই ক্ষেত্রেও দোষটা আসে মেয়েদের ওপরেই। আমার আত্মীয়রা পরামর্শ দিল, ‘শা’রীরিক মি’লনটাই তো জীবনের সব কিছু নয়। তুমি বাচ্চা দত্ত’ক নেয়ার কথা ভাবছ না কেন?’
আমার শ্বশুর’বাড়ির লোকরা হাতজোড় করে বলল, ‘সত্যিটা যদি জানাজানি হয়ে যায় তাহলে ল’জ্জায় আমাদের মাথা কাটা যাবে।’ আমার পরিবার বলে দিলো, ‘এটা তোমার ভাগ্য’।





তবে যে কথাটা আমার স্বামী বললো, তাতে আমি হত’বাক হয়ে গিয়েছিলাম। ‘তোমার যা ভাল লাগে করতে পার। যদি মনে করো, তাহলে অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গেও শুতে পারো। আমি তোমাকে বিরক্ত করব না, কাউকে কিছু বলবোও না। তা থেকে যদি তোমার সন্তান জন্ম নেয়, তাকে আমি নিজের সন্তান বলেও মেনে নেব’। কোনো মেয়ে কি তার স্বামীর কাছ থেকে এসব শুনতে পারে?





সে একটা বেইমা’ন। নিজের আর পরিবারকে লো’কল’জ্জা থেকে বাঁচানোর জন্য ওইসব বলছিল। আমার পা জড়িয়ে ধরে স্বামী বলেছিল ‘প্লিজ, এটা কাউকে বলো না। আমাকে ডি’ভোর্সও দিও না’। সে যেসব উপদেশ দিয়েছিল, আমি সেগুলো কল্পনাও করতে পারি না।





আমার ভবিষ্যৎ
আমার সামনে দুটো রাস্তা খোলা ছিল- হয় তাকে ত্যাগ করা অথবা তাকে নিজের জীবনসঙ্গী রেখে দিয়ে আমার নিজের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে ত্যাগ করা।
শেষমেশ আমারই জয় হলো। সেই তথাকথিত স্বামীর ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম আমি। আমার বাবা-মা কিন্তু আমাকে ফিরিয়ে নেয়নি। কয়েকজন বন্ধুর সাহায্যে আমি একটি মেয়েদের হোস্টেলে চলে যাই।





বিয়ের আগে চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিছুদিনের চেষ্টায় একটা নতুন চাকরিও যোগাড় করলাম। খুব ধীরে হলেও আমার জীবনটা আবার নিজের ছন্দে ফিরতে শুরু করছিলো। আমি কোর্টে বিয়ে বিচ্ছেদের মামলা ফাইল করলাম।
সেখানেও আমার স্বামী আর তার পরিবার নির্লজ্জের মতো সত্যটা গোপন করে বিয়ে ভাঙার জন্য আমার ওপরেই দোষারোপ করে। এমনকি বিয়ের পরে অন্য সম্পর্ক গড়ে তোলার দোষও দেয় আমার ওপরে।





লড়াই করে গেলাম
আমি লড়াইটা থামাইনি। নিজের মেডিকেল পরীক্ষা করাই। তিনবছর লেগে গিয়েছিল বিয়ে বিচ্ছেদ পেতে। আমার যেন পুনর্জন্ম হল। আজ আমার ৪০ বছর বয়স, কিন্তু আমি এখনো কু’মারী। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন পুরুষের সঙ্গে আমার স’ম্পর্ক তৈরি হয়েছে। তবে তাদের সকলেরই ভালবাসাটা ছিল শারী’রিক।





কেউ বিয়ে করা বা দীর্ঘমেয়া’দী সম্পর্ক গড়ে তোলায় ইচ্ছুক ছিল না। কিন্তু এখন আমি পুরুষদের কাছ থেকে একটু দূরে থাকারই চেষ্টা করি।





আমি শুধু সেইসব পুরুষের সঙ্গেই বন্ধুত্ব রাখতে চাই, যারা আমার খেয়াল রাখবে, আমার মনের ইচ্ছাগুলোকে বোঝার চেষ্টা করবে, জীবনভর আমার সঙ্গে চলার, সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করবে।