মিজানুর রহমান
ময়মনসিংহ প্রতিনিধিঃ
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ ও ঝুকিরোধে সরকারী টানা বন্ধের ১০ম দিন শনিবার। প্রত্যেকেই নিজ ঘরে অবস্থান করছে। আগে থেকেই মহাসড়ক সহ সকল রোডে সব ধরণের যানবাহন বন্ধ। এছাড়া পায়ে চালিত রিক্সা ছাড়া ব্যাটারী ও ইঞ্জিন চালিত সব ধরণের যানবাহন বন্ধ রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরসহ সকল উপজেলায় মানুষজনকে ঘরে আটকে রাখতে অঘোষিত লকডাউন করে দিয়েছে। এ অবস্থায় শহরের এক স্থান থেকে অন্যস্থানে হেটেই চলতে হচ্ছে।
এছাড়া অলিগলিতে চলাচলকারী দু চারটে রিক্সা, ব্যাটারী চালিত অটো বা রিক্সা রাস্তায় নামলেই চলে পুলিশ, সেনাবাহিনীর শাসন। ফলে সড়ক, মহাসড়ক যানবাহন শূন্য।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে সরকার প্রথমে ২৬ মার্চ থেকে টানা ১০দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে এই সাধারণ ছুটি বাড়িয়ে ১১ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছেন। টানা সতেরদিনের সরকারী ছুটিতে রাস্তায় নেই যানবাহন। চলছে অঘোষিত লকডাউন। বন্ধ করে দেয়া হয় উৎপাদনমুখি শিল্প প্রতিষ্ঠান গার্মেন্ট, সুয়েটার, স্টিলসহ অন্যান্য প্রাইভেট শিল্প প্রতিষ্ঠান। লকডাউনের মধ্যেই এ সব শ্রমিকরা নানা কষ্টে কোন রকমে বাড়ি ফিরে। মানুষজন কর্মহীন হয়ে পড়ায় অনেকেই অর্ধাহারে অনাহারে দিন পার করছে। সরকারী-বেসরকারীভাবে দেয়া হচ্ছে ত্রাণ।রবিবার রাজধানী ঢাকা ও গাজীপুরের গার্মেন্ট খোলা হবে এই কারণে প্রাণগাতী নভেল করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে গার্মেন্টকর্মী ও শ্রমজীবিরা ঝুকি নিয়েও কাজে যোগ দিতে পায়ে হেটেঁ কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে মানুষের বাধঁ ভাঙ্গা ঢল নেমেছে। গার্মেন্টস কর্মীদের দলবেধেঁ পায়ে হেটেঁ ছুটে চলার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো ছিল।ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের ব্রীজ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গার্মেন্টস কর্মীদের দেখে মনে হয়েছে মানুষের ঢল নেমেছে। ময়মনসিংহ, শেরপুর, নেত্রকোনা ও জামালপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গার্মেন্টস কর্মীরা ১০/১২ কিলোমিটার পায়ে হেটেঁ ময়মনসিংহে এসে ছোট যানবাহন, পিক আপ, অটোরিক্সা, সিএনজি এবং ট্রাকে উঠে জীবনের ঝুকি নিয়ে হাজার হাজার কর্মজীবি মানুষ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে প্রখর রোদ্রের মাঝে পায়ে হেটেঁ গাজীপুর ও ঢাকার দিকে রওনা দিয়েছেন, দেখলে মনে হবে মানুষের বাধঁ ভাঙ্গা ঢল নেমেছে।যানবাহন বন্ধ ও লকডাউন অবস্থায় গার্মেন্ট খুলে দেয়া হলে এ সব শ্রমিকরা পড়ে আবারো বিপাকে।
হাজার হাজার শ্রমিক তাদের পেটের তাগিয়ে কর্মস্থল ও নির্ধারিত গার্মেন্টে পৌছতে শনিবার ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকা থেকে পায়ে হেটে এবং নানা উপায়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিঘারকান্দা ও পাটগুদাম ব্রীজ মোড় বাসস্ট্যান্ডে আসেন। এ সব শ্রমিকরা কর্মস্থলে পৌছতে যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ময়মনসিংহ বিভাগীয় নগীর দিঘারকান্দা ও পাটগুদাম ব্রীজমোড়ে দীর্ঘ লাইন। নেই কোন যানবাহন। এছাড়াও সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতে পুলিশ সেনাবাহিনীর টহল। যানবাহনগুলোও শাস্তির ভয়ে কাউকে বহন করতে রাজি হচ্ছে না। এর পরও ছোট যান মিনি ট্রাকযোগে গাদাগাদি করে জীবনের ঝুকি নিয়ে চেষ্ঠা করছে গন্তব্যে পৌছতে। মহাসড়তে যেন স্রোত বইছে।
এ সব গার্মেন্টকর্মীরা যেভাবে গাদাগাদি করে ছোট বা মিনি ট্রাকে একজনের উপর আরেকজন কেউ বসে কেউ বা দাড়িয়ে গন্তব্যে রওনা হয়েছেন এতে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত কার্যক্রমে সরকারী নির্দেশনা বাস্তবায়নে খোদ প্রশাসনই হীমশিম খাচ্ছে।
গার্মেন্টস কর্মীরা জানিয়েছেন রবিবার গার্মেন্টস খোলা হবে বলে মোবাইল ফোনে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সে কারণে নভেল করোনার ভয় নিয়েও পেটের তাগিদে কষ্ট করে কর্মস্থলের দিকে রওনা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন নির্ধারিত সময়ে পৌছতে না পারলে তাদের চাকুরী চলে যাবে, চাকুরী রক্ষার জন্য জীবনের ঝুকি নিয়ে কর্মস্থলের দিকে পাড়ি জমিয়েছেন ।ময়মনসিংহ পাট গুদাম পুরাতন ব্রহ্মপুত্র ব্রীজ মোড় ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দিঘারকান্দায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন প্রাণঘাতী নভেল করোনা থেকে শ্রমজীবি এসম মানুষকে বাচাঁর জন্য তারা যাতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাচল করেন সেই জন্য সড়কে পুলিশ মাইকিং করছেন।