রাত প্রায় ৯.০০ টা। ল্যাম্পপোস্ট এর আলোয় রাস্তা দিয়ে হাটতেছি এমন সময় দেখলাম একটা বৃদ্ধ লোক রাস্তার পাশে অসচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। আমি তাড়াতাড়ি উনার কাছে গেলাম।
গিয়ে দেখি উনি অজ্ঞান হয়ে আছে মাথার পিছন দিক থেকে র’ক্তক্ষরণ হচ্ছে। পকেটে টাকা না থাকায় কোলে করে উনাকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে দৌড় দিলাম এমন সময় একটা রিক্সা পেলাম।
রিক্সাওয়ালাঃ মামা কই যাবেন?
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/Hjjwsnc.jpg” /></figure>
আমিঃ মামা এই লোকটাকে রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখলাম। কাছে এসে দেখি মাথার পিছন দিক থেকে রক্ত বের হচ্ছে। অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে।
রিক্সাওয়ালাঃ রিক্সায় উঠেন তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
আমিঃ মামা আমার পকেটে টাকা নাই।
রিক্সাওয়ালাঃ আরে মামা টাকা সারাজীবন কামাইছি। টাকার থেকে একটা মানুষের জীবন বাঁচন বেশি দরকার আপনি উঠেন।
তারপর রিক্সায় উঠে লোকটাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলাম। ইমার্জেন্সিতে পাঠিয়ে আমি বাইরে বসে রইলাম। রিক্সাওয়ালা চলে গেলো।
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/Hjjwsnc.jpg” /></figure>
এবার চলেন আপনাদের পরিচয় টা দিয়ে দিই আমি জুয়েল। অনার্স শেষ করে বেকার ঘুরতেছি। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। বাসা ফেনীতে।
কিন্তু আমি বাসা থেকে পালিয়ে ঢাকা চলে আসছি। এবার হয়তো ভাবছেন একটা ছেলে হয়ে কি করে বাসা থেকে পালাতে পারলাম।
চলেন সেই ঘটনাটা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে আমি। বাবার একটা দোকান ছিলো। ওটা দিয়ে কোনোমতে সংসার চলতো।
আমি অনেকবার বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু বাবার একটাই কথা পড়ালেখা করলে বাড়িতে থেকে করতে হবে। দূরে গিয়ে করার দরকার নেই।
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/Hjjwsnc.jpg” /></figure>
বাইরে থাকলে নাকি আমি খারাপ হয়ে যাবো। বাবা তার এক চাচাতো ভাইয়ের মেয়ের সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছে।
কারনটা হচ্ছে উনারা ছোট বেলায় নাকি অনেক ক্লোজ ফ্রেন্ড ছিলো। সেই হিসেবে আমার আর উনার মেয়ের বিয়ে ছোট বেলা থেকেই ঠিক করে রাখছে কিন্তু সেটা আমি জানতাম না।
আজকে সকালে আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে বাজারে গিয়ে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম, এরপর বাড়িতে যাচ্ছি এমন সময় আমার বন্ধু আয়মানের সাথে দেখা।
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/Hjjwsnc.jpg” /></figure>
আয়মানঃ তুই এতো বড় বেইমান কখনো ভাবিওনি।
আমিঃ মানে কি?
আয়মানঃ বাহ এবার তো দেখছি তোকে মানে বুঝাতে হবে, যেভাবে বলছিস মনে হয় তুই কিছুই জানিস না।
আমিঃ দোস্ত আমি সত্যিই কিছু জানি না।
আয়মানঃ চুপ থাক, শালা। বিয়ে করবি সেটা আমাকে বললে কি হতো?
আমিঃ বিয়ে!!! কার বিয়ে?
<figure><img class=”tie-appear” src=”https://i.imgur.com/Hjjwsnc.jpg” /></figure>
আয়মানঃ হইছে আর ঢং করতে হবে না। যা এখান থেকে।
আয়মান আমাকে কোনো কিছু বলতে না দিয়ে সোজা হাটা দিলো। আমি আবুলের মতো দাঁড়িয়ে রইলাম।
তারপর আমিও হাটা দিলাম। বাড়ির কাছে স্বপম ভাইয়ের দোকানের সামনে যাওয়ার সাথে সাথেই আমার এক ছোট ভাই শাওন ওর সাথে দেখা….
শাওনঃ কি জুয়েল ভাই, আপনি এইখানে?
আমিঃ তো কোথায় থাকতাম?
শাওনঃ আরে মিয়া বিয়ের আগে কেউ এমন ঘুরাঘুরি করে? একটু রেস্টে থাকতে হয়।
আমিঃ বিয়ে মানে? কার বিয়ে.???
শাওনঃ আরে তোমার বিয়ে। তুমি যানো না???
আমিঃ জানলে কি আর তোরে জিজ্ঞেস করি? কার সাথে বিয়ে?
শাওনঃ লিজা আপুর সাথে।
আমিঃ কিহ! ওই মুটকির সাথে?
শাওনঃ হুম, শামীম চাচার মেয়ের সাথে।
হায় আল্লাহ উঠায় নাও আমারে, ছোট বেলায় ওই মুটকিরে কতো কোলে নিয়েছি এখন নাকি তার সাথেই আব্বা বিয়ে ঠিক করছে। এবার বাচ্চাকাচ্চা হলে সবাই বলবে তোর বাপ তোর মারেও কোলে নিয়েছে এখন তোরে নিতেছে।
নাহ এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। জুয়েল তুই এক গ্লাস পানিতে ডুব দিয়ে মারা যা তবুও এই বিয়া করিস না।
আমিঃ আচ্ছা শাওন আমার আব্বারে দেখছিস?
শাওনঃ হুম ডেকোরেশন এর মালামাল নিয়ে বাড়ির দিকে গেছে।
আমিঃ আচ্ছা তুই যা, পরে কথা হবে।
আমি তাড়াতাড়ি বাড়ির দিকে হাটা দিলাম। বাড়িতে গেয়ে আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
আসলেই আব্বা বিয়ে ঠিক করছে অথচ একবারও আমাকে জানালো না।
আব্বা দেখতেছি এটাওটা নিয়ে অনেক ব্যস্ত। আমি সোজা আম্মুর কাছে গেলাম।
আমিঃ আম্মু এসব কি?
আম্মুঃ দেখতেছিস না। তোর বিয়ে।
আমিঃ আমার বিয়ে অথচ আমাকে জানালে না।
আম্মুঃ সব কিছু জানতে হবে কেন তোর।
আমিঃ দেখো আম্মু আমি আই বিয়েটা করবো না।
আম্মুঃ সেটা তোর বাবাকে বল, আমাকে বলে কোনো লাভ নেই।
তারপর বাবার কাছে গেলাম।
আমিঃ এই আব্বা এগুলো কি হচ্ছে?
বাবাঃ আব্বু তোমার বিয়ের অনুষ্ঠান এর পূর্ব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আমিঃ এই আব্বা আপনি পাগল হইছেন। আমার বিয়ে ঠিক করছেন আমাকে একবার বললেন ও না।
বাবাঃ মুরুব্বিদের কাজ মুরুব্বিরা করছে তোমাকে বলার কি আছে।
আমিঃ আব্বা আমি এই বিয়ে করবো না। আপনি এগুলো বন্ধ করেন।
বাবাঃ করবি না মানে? তুই করে তোর বাপও করবে। যা এখান থেকে।
শালার কেন যে এই ঘরে জন্ম নিলাম কে জানে। আমার কথার কোনো দামই নেই ওদের কাছে।
তাড়াতাড়ি ওই মুটকির কাছে গেলাম। বাহ! ফকিন্নি বিপ্লবী জনতা নিয়ে বসে ভাষণ দিচ্ছে আর হাসছে।
আমি যাওয়ার পর মুটকি ছাড়া বাকি সবাই রুম থেকে বের হয়ে গেলো।
আমিঃ ওই মুটকি সমস্যা কি তোর?
লিজাঃ দেখেন জুয়েলল ভাই আমাকে মুটকি বলবেন না। একটু পর আমি আপনার বউ হবো।
আমিঃ আরে রাখ তোর বউ। ফকিন্নি তোর মতো মুটকিকে কে বিয়ে করবে? আমি মরে গেলেও তো করবো না।
লিজাঃ আমার আব্বা আর তোমার আব্বা আগে থেকে সব রেড়ি করে রাখছে।
আমিঃ এখনো সময় আছে মুটকি বিয়েটা বন্ধ কর নাহলে তোরে প্রতিদিন মাইরের উপর রাখবো। তোর এই হাতির মতো শরীর টা মেরে মেরে কমাবো বলে দিলাম।
লিজাঃ মারবে কেন, তখন তো আদর করবা।
আমিঃ ধুর খবিশ।
এ কথা বলে মুটকির ওখান থেকে চলে আসলাম।
গিয়ে রুমের দরজা বন্ধ করে বসে রইলাম। কি করবো কিছুই মাথায় আসছে না।
দুপুরবেলা আম্মু আমার রুমে আসলো।
আম্মুঃ খেতে আয়।
আমিঃ খাবো না। যাও এখান থেকে।
আম্মুঃ প্লিজ বাবা এই রকম করিস না।
আমিঃ আম্মু আমি কিন্তু বাড়ি থেকে চলে যাবো। তোমাদের রুচি কেমন আমি বুঝি না ওই মুটকির সাথেই আমার বিয়ে ঠিক করলে। দেশে কি মেয়ের অভাব পড়ছে।
আম্মুঃ দেখ বাবা তোর বাবা লিজার বাবাকে কথা দিয়ে রাখছে আর ওর সাথে বিয়ে হলে তোরও একটা ভালো চাকরি হবে। আর তোর শামীম চাচা ওর সব সম্পদ তোর নামে দিয়ে দিবে।
2nd part coming soon..
subscribe our YouTube channel:
https://youtu.be/_zQXXrf0o6k