সোহরাব হোসেন ক্রাইম প্রতিবেদক,ঝিনাইদহঃ
বিধবা ভাতার টাকা কম দেওয়ার প্রতিবাদ করে নাজেহাল হচ্ছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হতদরিদ্র মহিলারা। এ নিয়ে কালীগঞ্জে হৈ চৈ শুরু হয়েছে। জানা গেছে, গৃহপরিচারিকা আখিরন নেছা সোমবার সোনালী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখায় গিয়েছিলেন বিধবা ভাতা’র টাকা উত্তোলন করতে। তার পাওনা ছিল চার হাজার পাঁচ শত টাকা। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ভাতার বইতে চার পাঁচ শত টাকা প্রদান লিখলেও তার হাতে ধরিয়ে দিচ্ছিলেন ৩ হাজার টাকা। এসময় তিনি বাকি টাকার কথা জানতে চাইলে বলা হয়েছে “বেশি বুঝলে মোটেও পাবেন না”! একইভাবে কদবানু নামে আরেক মহিলার হাতেও চার হাজার পাঁচ শত টাকার পরিবর্তে দেওয়া হয় তিন হাজার টাকা।
তাকেও বলা হয় এই টাকা নিলে নেন, না নিলে চলে যান বলে হুমকী দেন ব্যাংক কর্মকর্তা। আখিরন নেছা, কদবানু শুধু নয়, এ জাতীয় অসংখ্য বিধবা নারীর টাকা কম দিয়েছেন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। যা পরবর্তীতে স্থানীয় সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের হস্তক্ষেপে ফেরত ভুক্তভুগিরা পেয়েছেন। এবিষয়ে সাংসদ সদস্য আনাররের ভাষ্য অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের দেওয়া এই টাকা আত্বসাতের উদ্দেশ্যেই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের হাতে কম টাকা তুলে দিচ্ছিলেন। পরে তার উপস্তিতিতে ১৫ জনের টাকা ফেরৎ দেওয়া হয়। এমপি আরো জানান, আরো অসংখ্য মানুষের সঙ্গে এটা করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ কৌশিক খান জানান, প্রতি মাসে অত্র উপজেলায় বয়স্ক, প্রতিবন্ধি ও বিধবা ভাতা হিসেবে ৭৮ লাখ ৩৭ হাজার ২৫০ টাকা দেওয়া হয়।
এর মধ্যে ৪০০৯ জন বিধবা ভাতা, ৮৪০০ জন বয়ষ্ক ভাতা ও ২১৭৭ জন প্রতিবন্ধী ভাতা পেয়ে থাকেন। সরেজমিনে সোনালী ব্যাংকের কালীগঞ্জ শাখায় গিয়ে দেখা যায় সোমবার যাদের টাকা কম দেওয়া হয়েছিল তাদের টাকা দেওয়া হচ্ছে। সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজ কর্মী রবিউল ইসলাম জানান, তারা খোজখবর নিয়ে আরো ১৪ জনের সন্ধান পেয়েছেন। তাদের বাকি এক হাজার পাঁচ শত টাকা পাওয়ার বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে ব্যাংকে এসেছেন এবং ইতিমধ্যে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের সেই টাকাও পরিশোধ করেছেন। আর কেউ টাকা কম পেয়ে থাকলে তার টাকা পাওয়ার ব্যবস্থাও নিবেন বলেও জানান।
এসময় নার্গিস বেগম জানান, তিনি ১৫ শত টাকা কম দেওয়ার কারন জানতে চাওয়ায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে তাড়িয়ে দিয়েছেন। উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ কৌশিক খাঁন আরো জানান, টাকা কেটে রাখার বিষয়টি কোনো ভাবেই ঠিক হয়নি। ভাতা প্রাপ্তদের যে বই আছে সেখানে চার হাজার পাঁচ শত টাকা লিখে তিন হাজার টাকা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এটা দুর্নীতি। এ বিষয়ে ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক শামীম রেজা জানান, অনেক কাজের মধ্যে এই কাজটি করতে গিয়ে তার অফিসাররা ভুল করেছেন। তবে পরে সেটা সমাধানও করে ফেলা হয়েছে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি ।