২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষা হবে না। সার্বিক বিবেচনায় এখন এইচএসসি পরীক্ষা সরাসরি গ্রহণ না করে ভিন্ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হবে। বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে কথা বলে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।





বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি। যে পদ্ধতিতে এইচএসসির রেজাল্ট হবে সে ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘জেএসসি-এসএসসির রেজাল্ট অনুযায়ী এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন করা হবে।’





মন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে মূল্যায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি থাকবে। তারা এ বিষয়ে তাদের মতামত দেবেন। সে অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করা হবে।’





‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতি কখন স্বাভাবিক হবে তার নিশ্চয়তা নেই’ জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কখন পরীক্ষা নেয়া যাবে বলা কঠিন। এর মধ্যে যথার্থতা বজায় রাখার বিষয়টি ভাবতে হবে। পরীক্ষা গ্রহণ করতে ৩০ থেকে ৩২ কর্মদিবস প্রয়োজন হবে। কোভিড পরিস্থিতিতে এক বেঞ্চে দু’জন বসানো সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে দ্বিগুন কেন্দ্র প্রয়োজন হবে। প্রশ্নপত্র প্যাকেটজাত করা হয়। নতুন প্যাকেট করারও সুযোগ নেই।’





‘পরীক্ষা কেন্দ্র দ্বিগুন করলে আরো জনবল প্রয়োজন হবে’ উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘প্রশাসনসহ সবার জনবল বাড়ানো প্রয়োজন রয়েছে। বিষয় কমানো হয়তো যায়, কিন্তু প্রতিটি বিষয়ের গুরুত্ব রয়েছে। অনেকে এতে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করতে পারে। কিন্তু কোভিড সংক্রমিত হলে তখন কী হবে। এ নিয়ে আমরা চিন্তা করছি। ভারতের পরীক্ষাও আমরা দেখেছি। তিনটি পরীক্ষা নেয়ার পর তাদের পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। অনেক দেশে পরীক্ষা বাতিল কিংবা স্থগিত করেছে।’





এর আগে মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আপনাদের সময় জানিয়ে দেব। যখন সময় হবে, তখন বিস্তারিত জানানো হবে। আজ (মঙ্গলবার) জানাতে পারব না। কাল হয়তো আপনাদের সঙ্গে কথা বলব।’





দেশে সাধারণত এপ্রিল-মে মাসে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও চলতি বছর মহামারি করোনার কারণে নির্দিষ্ট সময়মত অনুষ্ঠিত হয়নি এইচএসসি এবং সমমানের পরীক্ষা। এই পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে, সে বিষয়ে এর আগে কয়েকদফা আলোচনা হলেও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি। তবে শিক্ষামন্ত্রী এবং শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতি অব্যাহত রাখার উপদেশ দিয়ে জানিয়েছিলেন পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ১৫ দিন আগে নোটিশ দেয়া হবে।





এইচএসসির পরীক্ষার মত বড় আয়োজন করা হলে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে, এমন আশঙ্কা থেকেই এতদিন পরীক্ষা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বারবার আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে জনস্বাস্থ্যকে ঝুঁকিতে ফেলে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত দেয়া হবে না। এবার ১৪ লাখ পরীক্ষার্থীর জন্য প্রায় দুই হাজার ৫০০ কেন্দ্রে প্রস্তুত করেছিল ১১টি শিক্ষা বোর্ড।